সন্তানদের কিসের উপর রেখে যাচ্ছি-১
২০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
আদরের সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে মা-বাবার চিন্তার অন্ত নেই। বর্তমান সমাজের দিকে তাকালেই বিষয়টি আমরা আরো ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারি। পিতা-মাতার অর্থ, চিন্তা, মেধা ও শ্রমের বড় অংশ, বরং বেশির ভাগ ব্যয় হয় সন্তানের ভবিষ্যত বিনির্মাণে। সন্তানের ভবিষ্যতের স্বার্থে মা-বাবা সবকিছু বিসর্জন দেন। এটিই স্বাভাবিক, এটিই হওয়া উচিত। কিন্তু সন্তানের ভবিষ্যত-চিন্তার সবগুলো দিক নিয়ে কি আমি যথাযথ ভাবছি এবং সঠিক মাত্রায় গুরুত্ব দিচ্ছি?
সেদিন কুরআনে কারিম তিলাওয়াত করছিলাম। সেখানে একটি আয়াত তিলাওয়াত করছিলাম, যেখানে পিতা তার মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে বুঝতে পেরে সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করছেন এবং সন্তানদের নসিহত করছেন : ...যখন ইয়াকুবের মৃত্যুর সময় এসে গিয়েছিল; যখন সে তার পুত্রদের বলেছিল- ‘আমার পর তোমরা কার ইবাদত করবে? তারা সকলে বলেছিল, আমরা সেই এক আল্লাহরই ইবাদত করব, যিনি আপনার মাবুদ এবং আপনার বাপ-দাদা ইবরাহিম, ইসমাইল ও ইসহাকেরও মাবুদ। আমরা কেবল তাঁরই অনুগত।’ (সূরা বাকারা-১৩৩)
আয়াতটি আমার অন্তরকে আলোড়িত করল; তাই তো! এটিই তো সন্তানের ভবিষ্যত-চিন্তার সবচেয়ে বড় দিক। একজন নবীর জীবন থেকে শিক্ষাগ্রহণের জন্য কত সুন্দর করে আল্লাহ তাআলা বিষয়টি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। সন্তানের ভবিষ্যতের কত দিক নিয়েই তো আমরা চিন্তা করি, পরিকল্পনা করি এবং বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করি। আমি কি এ দিকটি নিয়ে যথাযথ চিন্তা ও পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি? মনে রাখা দরকার, সন্তান আমার হাতে আল্লাহর আমানত!
এ আয়াতটি নিয়ে ভাবতে ভাবতে এ বিষয়ে আরো কিছু আয়াত মনে পড়ল। আয়াতগুলোতে কত সুন্দর করে সন্তানের ভবিষ্যত-চিন্তার এ দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। উল্লিখিত আয়াতের আগের আয়াতে ইরশাদ হয়েছে- ‘ইবরাহিম তাঁর সন্তানদের এ কথারই ওসিয়ত করলেন এবং ইয়াকুবও (তাঁর সন্তানদেরকে) যে, হে আমার পুত্রগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য এ দ্বীন মনোনীত করেছেন। সুতরাং তোমাদের মৃত্যু যেন মুসলিম অবস্থায়ই হয়।’ (সূরা বাকারা-১৩২)
আজ চারিদিকে শয়তানের দোসররা আমাদের সন্তানদের মিল্লাতে ইবরাহিম থেকে-ইসলাম থেকে বঞ্চিত করার জন্য নানা ফাঁদ পেতে চলেছে। ‘আলো’ নাম দিয়ে বিভিন্ন অন্ধকারের দিকে তাদের ঠেলে দিচ্ছে। সংস্কৃতির শিরোনামে তাদেরকে আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত করছে। বাঙালি সংস্কৃতির নাম নিয়ে তাদের পৌত্তলিকতা ও পূজা-পার্বনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ঈমান হরণ করছে। আমরা কি তাদের জন্য এ পরিমাণ দ্বীনি ইলমের (জ্ঞানের) ব্যবস্থা করে যেতে পেরেছি, যার দ্বারা তারা ঈমানের উপর টিকে থাকতে পারে? আমরা কি তাদের সামনে আলো-আঁধার স্পষ্ট করে যেতে পারছি?
হ্যাঁ, অবশ্যই প্রতিটি মা-বাবা বিষয়টি নিয়ে ভাবেন। এ আয়াতগুলো আমাদের শিক্ষা দেয় সে ভাবনার মাত্রা কেমন হবে। মৃত্যুর সময় সন্তানের ভবিষ্যতের যে দিকটি নিয়ে আল্লাহর নবী ইয়াকুব (আ.) ভাবলেন, সন্তানের ভবিষ্যত-চিন্তায় আর ১০টি বিষয়ের সাথে এটিকে সর্বাগ্রে ভাবতে হবে। তা নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে- এ শিক্ষাই দিয়ে গেছেন আল্লাহর নবী ইয়াকুব (আ.) ও মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহিম (আ.)।
দ্বীনি শিক্ষা বলতে আমরা অনেকে বুঝি, কুরআন তিলাওয়াত করতে পারা ও নামাজটা কোনোরকম পড়তে পারা। একটু চিন্তা করি, শুধু এতটুকু দ্বারা কি আমার সন্তান ইসলামের আলো গ্রহণে ও গোমরাহির নানা অনুষঙ্গ থেকে বাঁচতে সক্ষম হবে? সন্তান কাদের সাথে চলছে, কাদের পথে চলছে তা নিয়ে ভাবি এবং সন্তানকে নুহ (আ.)-এর মতো দরদের সাথে সঠিক পথ দেখিয়ে যাই।
নুহ (আ.) আপন সন্তানকে বলেছিলেন, ‘হে বৎস! আমাদের সাথে কিশতিতে আরোহণ করো, কাফেরদের সাথে থেকো না।’ (সূরা হুদ-৪২) আমাদের সন্তানরাও যেন ইসলামের কিশতিতে আরোহণ করে কুফরির সয়লাব (প্লাবণ) থেকে বাঁচতে পারে- আমরা তার জন্য ভাবনা-পরিকল্পনা করি। আরেকটি আয়াতে সন্তানের প্রতি লুকমান হাকিমের উপদেশবাণী বিবৃত হয়েছে, ‘এবং স্মরণ করো, যখন লুকমান তার পুত্রকে উপদেশচ্ছলে বলেছিল, ওহে আমার বাছা! আল্লাহর সাথে শিরক করো না। নিশ্চিত জেনো, শিরক চরম জুলুম (সবচেয়ে মারাত্মক অন্যায়)।’ (সূরা লুকমান-১৩)
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের বিপক্ষে যে একাদশ দিয়ে মাঠে নামছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস
শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া
ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল
‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’
প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের
প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া
মুসলিম চিকিৎসক
শীর্ষে দিল্লি
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান